৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়া সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবন হস্তান্তরের প্রায় দশমাস পেরিয়ে গেলেও লোকবল সংকটের কারণে সেখানে সকল কার্যক্রম চালু হয়নি। শুধু বহির্বিভাগ চালু হলেও অন্য সকল কার্যক্রম চলছে ৩১ শয্যার পুরনো ভবনেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে চিকিৎসক সংকটও। ফলে দাপ্তরিক কার্যক্রমসহ ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
এছাড়াও, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩টি এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি মাত্র সচল রয়েছে। সবমিলিয়ে প্রতিদিন এখানে আসা উপজেলার প্রায় চার থেকে পাঁচ শতাধিক রোগীকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। তবুও, তারা আন্তরিক সেবা দানের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দাবী করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্যান্য চিকিৎসা সেবার ন্যায় বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীদের জন্যেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। বিশেষ করে কিট সংগ্রহ করা হয়েছে। রয়েছে পরীক্ষার ব্যবস্থাও।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদের শেষ বছরে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে। ওই বছরের ৩০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট সফরকালে ৫০ শয্যায় উন্নীত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ কাজ শেষে ২০১৮ সালে ১৮ অক্টোবর কমপ্লেক্সটির ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
কমপ্লেক্সে ১৫৫টি পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৩৯টি পদশুন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার অনুমোদিত ১০টি পদের মধ্যে ১টি পদ (জুনিয়র কনসালটেন্ট) শুন্য রয়েছে। বাকি ৯টি পদের মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ও জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া) পরিচালক (স্বাস্থ্য) সিলেটে বিভাগ, সিলেটে সংযুক্তিতে কর্মরত। মেডিকেল অফিসার হোমিওপ্যাথিক প্রেষণে গাজীপুরের টঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তার ২২টি অনুমোদিত পদের মধ্যে সিনিয়র স্টাফ নার্স (মিডওয়াইফ) ৩টি পদ শুন্য রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ১০৪টি পদের মধ্যে শুন্য রয়েছে ২২টি পদ। সেগুলো হল- পরিসংখ্যানবিদ (১টি), ক্যাশিয়ার (১টি), স্টোর কিপার (১টি), অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (১টি), স্যাকমো (২টি), ফার্মাসিস্ট (১টি), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (আর.জি) (১টি), সহকারী নার্স (১টি), সিএইচসিপি (৬টি), স্বাস্থ্য সহকারী (৬টি) ও টিএলসিএ (গভ:) (১টি)।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর ১৯টি অনুমোদিত পদের মধ্যে শুন্য রয়েছে ১৩টি পদ। সেগুলো হল, ওয়ার্ড বয় (২টি), আয়া (২টি), মালী (১টি), নিরাপত্তাপ্রহরী (১টি), বাবুর্চি (২), অফিস সহায়ক (৩টি) ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী (২টি)।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানান, শুন্য পদের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আমরা তালিকা প্রস্তুত করছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. আবদুর রহমান মুসা জানান, শুন্য থাকা পদগুলোতে লোকবল নিয়োগ হলেই নতুন ভবনে এমনিতে সকল কার্যক্রম চালু হয়ে যাবে। একইভাবে চালক নিয়োগ হলে এ্যাম্বুলেন্স সমস্যারও সমাধান হবে। তবে বর্তমানে যে একটি এ্যাম্বুলেন্স আছে সেটি দিয়েই কাজ চালানো যাচ্ছে।
ডেঙ্গু প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা কিট সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষারও ব্যবস্থা আছে। তবে আপাতত বিশ্বনাথ উপজেলায় নতুন করে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হয়নি।